স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার নিউ খোকসা হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার অপারেশন রোগীদের মধ্যে নিন্মমানের ওষুধ সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় এক অপারেশন রোগীর স্বামীকে ঘারে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বেড় করে দেওয়ায় দুই পক্ষ মুখমুখি।
উপজেলা সদরের নিউ খোকসা হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতালে শনিবার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সন্তান সম্ভাবা ফাতেমা খাতুনকে নিউ খোকসা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন তাতক্ষনিক ভাবে অন্য রোগীদের সাথে ফাতেমার সিজার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের প্রথম দিন প্রসূতিকে চিকিৎসাপত্র মাফিক ওষুধসহ বেশ কয়েকটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। পরদিন প্রসূতিদের মধ্যে সরকারী হাসপাতালে সরবরাহ করা কয়েকটি ট্যাবলেট দেওয়া হয়। এ নিয়ে ভর্তি রোগীদের অভিভাবকদের সাথে হাসপাতালের সেবিকাদের বাক বকবিতান্ডা হয়। ফাতেমার স্বামীর নাম মোঃ বিটু। তিনি পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এ ঘটনা কেন্দ্র করে রাতেই বর্ণি নামের এক অপারেশন রোগীর স্বামী রাজু কে ঘারে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বেড় করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে রোগীর লোক হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
ঘটনা স্থলে সরেজমিন গিয়ে এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। সিজার অপারেশনের রোগীদের বিছানায় হাসপাতালে কথিত সেবিকার দেওয়া তিনটি খোলা বরি পাওয়া যায়। বসবাসের জন্য তৈরী বাড়িতে গাদাগাদি করে রোগীদের বিছানা দেওয়া হয়েছে। অপারেশনের তিন দিনের মাথায় শনিবার একজন ডাক্তার এসেছিল। তিনিও কোন রোগীর সাথে সমস্যা নিয়ে কথা বলেননি।
কিনিকের ভিতরে অপারেশন রোগী ফাতেমা খাতুনের স্বামীর বড় ভাই আশরাফুল আলম টিটো জানান, রোগীর অপারেশন ওষুধসহ ১২ হাজার টাকা মেটানো ছিল। কিন্তু ওষুধ নিয়ে প্রতারনা করা হচ্ছে। রোগীর অপারেশনের পর যেসব সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল তা না করে উল্টো নিন্মমানের সরকারী হাসপাতারের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। অপারেশনের পর আর কোন ডাক্তার ভিজিট করেনি।
বর্ণি নামের এক রোগীর শ্বাশুরী রাবেয়া খাতুন অভিযোগ করেন। ছোট ছোট রুমের মধ্যে ২/৩ জন করে রোগীকে রাখা হচ্ছে। সরকারী হাসপাতালের ওষুধ কিনিকে দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় কিনিকের মস্তান বাহিনী তার ছেলের রাজুকে ঘারে ধাক্কাদিয়ে কিনিক থেকে বেড় করে দিয়েছে। তিনি প্রতারকদের বিচারের দাবি করেন।
কথা বলতে রাজি হয়নি কিনিকে কর্তব্যরত কথিত সেবিকা। তিনি জানান, সকালে মালিক পক্ষ আসলে অফিসে গিয়ে কথা বলতে হবে।
রাত পৌনে ১১টায় কথিত কিনিকের দুই পাটনার আবুল কালাম ও মানিক শেখকে তাদের চেম্বারেই পাওয়া যায়। তারা দাবি করেন রোগীর স্বামীকে ঘারে ধাক্কা দিয়ে কিনিক থেকে নামিয়ে দেয়নি। এ ছাড়া নিন্মমানের ওষুধ সরবরাহ সর্ম্পকে কথা বলতে রাজি হননি।
ঘটনা স্থলে উপস্থিত পুলিশের এসআই নৃপেন্দ্র নাথ রোগীদের মধ্যে নিন্মমানের ওষুধ সরবরাহের বিষয় নিশ্চিত করেন। তিরি আরো জানান, কিনিকের মালিক ছিল না। অন্যরা দায়িত্বে ছিলেন। তারা কথা দিয়ে ছেন এমন ভুল আর করবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামরুজ্জামান বলেন, কেউ অভিযোগ করেননি। তবে ঘটনাটি তিনি ফেজবুকে দেখেন। আগামীকাল তিনি ভিজিট করবেন। কিনিকটির লাইসেন্স সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে ঠিক ছিল। এখন কি হয়েছে তা জানা নেই।