খোকসার একই ব্যক্তি দুই পদে চাকরি করছেন

0
10

স্টাফ রিপোর্টার

একই ব্যক্তি মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্প ও একটি মাদ্রাসায় আরবি প্রভাষক পদে চাকরি করে চলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাযোসে প্রতি মাসে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের সরকারী বেতন ভাতাসহ সব সুবিধা ভোগ করছেন। দুই প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব শত কিলোমিটার হলেও অধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বললেন তিনি নিয়মিত অফিস করেন।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার চাঁদট এম.বি. মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মোঃ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও বেতন ভাতা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। তিনি চাঁদট গ্রামের ভাদু বিশ্বাসের ছেলে। এনটিআরসির মাধ্যমে নিয়োগে পেয়ে ১ ফেব্রæয়ারি ২০২২ সালে তিনি ওই মাদ্রাসায় আরবি প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এই চাকুরিতে তিনি গাজীপুরের ঠিকানার জাতীয় পরিচয় ব্যবহার করেছেন। একই ব্যক্তি (মোঃ রেজাউল করিম) মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এসইএসডি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন ২০১২ সালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার পদে যোগদান করেন। ১৫ জুন ২০১৫ সাল থেকে তিনি (মোঃ রেজাউল করিম) মাগুড়ার মহম্মদপুর উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। সরকারী প্রকল্পের চাকুরিতে ব্যবহার করেছেন খোকসার চাঁদট গ্রামের ঠিকানার জাতীয় পরিচয় পত্র। খোকসার চাঁদট গ্রাম থেকে মাগুড়ার মহম্মদপুরের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি বাবুল আকতারের লোক হওয়ায় রেজাউল করিম মাসের পর মাস মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকে বেতন নিয়েছেন। তিনি ২০২২ সাল থেকে চলতি ২০২৫ সালের ফেব্রæয়ারি মাসের শেষ এমপিওতেও বেতন তুলেছে।

মাগুড়ারর মহম্মদপুর উপজেরা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, একাডেমিক সুপার ভাইজার রেজাউল করিম চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সরকারী বেতন ভাতা নিয়েছেন। গত একমাস যাবত তিনি অপারেশন জনিত কারণে ছুটি নিয়েছেন। তবে মাঝে মধ্যে অফিস করছেন।

দুই পদে চাকুরীরত রেজাউল করিমের সাথে কথা বলা হলে তিনি স্বীকার করেন দুই পদে চাকুরি করার কথা। তবে মাদ্রাসা থেকে তিনি বেতন উত্তোলন করেননি বলে দাবিও করেন। তিনি আরও জানান, মাধ্যমিক অধিদপ্তরের যে প্রকল্পে চাকুরি করতেন সে প্রকল্পটি ইতোমধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া একাডেমিক সুপারভাইজার পদের চাকুরি থেকে তিনি যে বেতন গ্রহন করেছেন তা সরকারী তহবিলে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তিনি টাকা ফেরত দেবেন।

চাঁদট এম.বি.মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মহম্মদ শহিদুজ্জামান মুঠো ফোনে বলেন, আরবি প্রভাষক রেজাউল করিম এনটিআরসির মাধ্যমে নিয়োগ পেছেন। তিনি যোগদানের পর থেকে নিয়োমিত ক্লাস করছেন। সাথে বেতন ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন।

মাগুড়ার মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহম্মদ আনোয়ার হোসেনের সাথে ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানান, একাডেমিক সুপারভাইজার রেজাউল করিম নিয়োমিত চাকরি করে আসছেন। সরকারী বেতন ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন। পাইলস অপারেশনের কারনে গত একমাস ছুটিতে কাটিয়েছেন। তবে মাঝে মাঝে অফিস করছেন।

আরও পড়ুন – যৌথ অভিযানে ১৪টি দেশীয় পাখি উদ্ধার

খোকসা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে তিনি শুনেছেন। মাদ্রাসা গুলো তাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে। এখানে তাদের কিছু করার থাকে না। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মাকর্তা ওই শিক্ষককে ডেকেছিলেন। সেখানে কি কথা হয়েছে তা জানা নেই।

আরও পড়ুন – তিন ভারতীয় চোরাকারবারি আটক, মাদক উদ্ধার

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দ্বিপন বলেন, অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মাগুড়ার সাথে সমন্বয় করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।