চলন্ত পিকাপ ভ্যান থামিয়ে আবারও ৭টি গরু ডাকাতি

0
60

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে আবারো গরু বোঝাই চলন্ত পিকাপ ভ্যানে সশস্ত্র ডাকাতরা হানা দিয়ে দুইজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ৭টি গরু লুটে নিয়ে গেছে।

বুধবার ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহসড়কের সদকী ইউনিয়নের ফুলতলা মৎস্য হ্যাচারীর সামনে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ডাকাত দলের হামলায় আহতরা হলেন-গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থানার পাচড়া এলাকার কুদ্দুস শেখের ছেলে জনি শেখ (৩৬) ও হোচেন শেখের ছেলে হৃদয় হোসেন ( ৩৩)। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন চিকিৎসক।

এঘটনায় পিকাপ ভ্যান চালক মো. সজিবকে (৩৪) সন্দেহ করছেন গরুর মালিক নাজমুল। সজিব দিনাজপুরের রুস্তমপুর এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে। তাকে কুমারখালী থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর রাতে একই সড়কের চাপড়া ইউনিয়নের দবিরমোল্লা গেট এলাকা থেকে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে এবং পিকআপ ভ্যান থামিয়ে মারধর করে রিপন শেখ নামের এক খামাড়ির পাঁচটি গরু ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। তিনি ফরিদপুরের ভাঙা থানাধীন চকিঘাটা এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও এক ভিকটিমের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের খানদারপাড়র কালাম শেখের ছেলে নাজমুল (৩১) এবং পাচড়া এলাকার জনি শেখ ও হৃদয় হোসেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ পশুহাট থেকে গত মঙ্গলবার বিকালে প্রায় তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা মূল্যের আটটি বাছুর গরু খরিদ করেন। গরু গুলো নিয়ে ভাড়া করা পিকাপ ভ্যানে ( ঢাকা মেট্রো ন -১২-০২২৫) বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে চার – পাঁচজন সশস্ত্র ডাকাত পিকআপের সামনে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে তাদের গতিরোধ করে। এরপর ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গরুর মালিক জনি ও হৃদয়ের কাঁধে – পিঠে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করে। এসময় অপর গরু মালিক নাজমুল ভয়ে মাঠের মধ্যে দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং ‘৯৯৯’ কল দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌছে ভিকটিমদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে ততক্ষণে ডাকাতদল ৭টি গরু নিয়ে পালিয়ে যান। তবে চালক সজিবকে কোনো আঘাত করেনি ডাকাতরা।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, থানা চত্বরে রাখা রয়েছে জব্দকৃত পিকাপ ভ্যানটি। ভ্যানের ওপরে রয়েছে উদ্ধারকৃত লাল রঙের একটি গরু। এনিয়ে থানা চত্বরে কথা হয় গরু মালিক নাজমুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনলাইনে গরু দেখে আমরা তিনজন দিনাজপুরে গিয়েছিলাম গরু কিনতে। পছন্দ হওয়ায় তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকায় ৮টি গরু কিনে ভাড়া পিকাপ ভ্যানে ফিরছিলাম। পথে কুমারখালীর মৎস্য হ্যাচারীর সামনে চার – পাঁচজন ডাকাত প্রথমে গাড়িতে আঘাত করলে চালক গাড়ি থামিয়ে দেন। এসময় ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জনি ও হৃদয়কে এলোপাতাড়ি কোপ শুরু করে। তা দেখে আমি দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং ‘৯৯৯’ কল দিই। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করলেও ডাকাতরা ৭টি গরু নিয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, জনি ও হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রথমে কুমারখালী এবং পরে কুষ্টিয়া হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। তারা এখন গাড়িতে ঢাকার পথে।

তার ভাষ্য, গাড়ি চালক সজিব সারা পথ বিভিন্ন জনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং কখন কোথায় আছি তা জানিয়েছে। আবার ডাকাতরা চালককে কোনো আঘাতও করিনি। এঘটনায় চালক জড়িত। থানায় মামলার এজাহার দিয়েছি।

আরও পড়ুন – মোবারকগঞ্জ চিনিকল ছাত্রলীগ-যুবলীগ পুনর্ববাসন কেন্দ্রে

অভিযোগ অস্বীকারে পুলিশ হেফাজতে থাকা চালক সজিব বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো গরু তুলেছেন গাড়িতে। ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।

আরও পড়ুন – গণহত্যার দায়ে আদালতই শেখ হাসিনাকে দেশে আনবে – আমান উল্লাহ আমান

আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান কুমারখালী থানার ওসি সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, চালককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। থানায় ডাকাতি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।