কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে বুরাপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। রবিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে স্কুল মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে এক বৃদ্ধসহ তিনজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে কয়েকদিন ধরেই ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী রাশেদ মাহমুদ নাসিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তারা দুইজনেই কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুরাপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিকালে স্কুলের মাঠে আমার উপস্থিতিতে একটা মিটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি যাওয়ার আগেই তারা দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কয়েকশ নেতাকর্মী ছিলেন জানিয়ে ওসি বলেন, অনেকের হাতেই দেশীয় ধারালো অস্ত্র-সস্ত্র ছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্নভাবে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আহত কর্মীদের দেখতে আসা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ার্দ্দার সাংবাদিকদের বলেন, বুরাপাড়া স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে আমাদের স্থানীয় জামায়াতের এক নেতার নাম জমা দেওয়া হয়েছে। পরে বিএনপি নেতা নাসির আমাদের প্রার্থীকে আবেদন তুলে নিতে হুমকি দেন। হুমকিতে কাজ না হওয়ায় শনিবার রাতে তার বাড়িতে হামলা করা হয়। সেজন্য আজ আমরা একটা শালিসি মিটিংয়ের আয়োজন করেছিলাম। বিএনপি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেই নাসিরের নেতৃত্বে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
মিরপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, নাসির এক সময় ছাত্রদল নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী। তবে ঘটনাটি যেহেতু স্থানীয় দুই পক্ষের তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ হাসান ইমাম বলেন, হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে একজন বৃদ্ধের অবস্থা গুরুত্বর। প্রত্যেকেই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত।
আরও পড়ুন – কুমারখালীতে টিসিবির তেল চেয়ে ৫৭০ জনের লিখিত আবেদন
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম আরও জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।