কুমারখালীতে ৩৮ দিন পর কবর থেকে ট্রাক চালকের লাশ উত্তোলন

0
78

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের প্রায় ৩৮ দিন পর কবর থেকে তরিকুল শেখ (৩২) নামের এক ট্রাক চালকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া বাইত্লু মামুর কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। নিহত ওই ব্যক্তি একই এলাকার ছাবদ্লু শেখের ছেলে।

আদালতের নির্দেশে মরদেহটি উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন, নিহতের স্বজন ও কয়েক শত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন।

স্বজনদেও দাবি, পাওনা টাকার জেরে তরিক্লুকে লোহার ডগ্রসগান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিলেন তার ট্রাকের হেলপার আল আমিন শেখ। ঘাতক হেলাপার খোকসার সিংঘড়িয়া চরপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, নিহত তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাক চালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল ট্রাক চালিয়ে মোংলা বন্দরে থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কুষ্টিয়ার বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌছালে তার কাছে মাদকদ্রব্য চান গাড়ির হেলপার আল আমিন শেখ (২৭)। সেসময় মাদক না দিলে লোহার গ্রিসগান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে হেলপার আল আমিন। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আল আমিন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায় এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিনই ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি দাফন করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দুদিন পর গত ১৬ ডিসেম্বর হেলপার আল আমিনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ট্রাক চালক তরিকুলকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় ১৬ ডিসেম্বর নিহত তরিকুলের চাচা মো.আব্দুল্লাহ (৫৩) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় হেলপার আল আমিনকে আসামি করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত ২২ ডিসেম্বর মরদেহটি উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করেন। আর প্রক্রিয়া শেষে বুধবার মরদেহটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চান হেলপার আলামিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে লোহার গ্রিসগান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না? তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য (গাঁজা) চেয়ে না পাওয়ার কারণে চালককে হত্যা করেছিল হেলপার আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।

আরও পড়ুন – আ’লীগকে তৃতীয়বার গণহত্যার সুযোগ দেওয়া হবে না – রাশেদ মোঃ খাঁন

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.মহসিন উদ্দিন জানান, আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।