খোকসায় কলেজ সভাপতির সাথে ছাত্রদলে একাংশের সংঘর্ষ

0
84
আহত ছাত্রদল নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় একটি মহিলা কলেজের সভাপতি ও ছাত্রদলের একাংশের নেতার মধ্যে হামলা পাল্টা হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। সভাপতির দাবি বিদায়ী সভাপতির মদদে বহিরাগতরা কলেজের অফিসে তার উপর এ হামলা করেছে। আহতরা বলছেন, তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অনুমতি চাইলে তাদের উপর হামলা হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সদরের আলহাজ্ব সাইদুর রহমান মন্টু মহিলা কলেজের অফিস কক্ষে এ হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের পৌর শাখার সভাপতি প্রার্থী তানজিন ইসলাম আদিত্যের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ সকালে কলেজ ক্যাম্পোসে গেলে নতুন সভাপতি সাইফুল্লা খালিদ রুমেলের সাথে বাকবিতান্তা হয়। এক পর্যায়ে তা হামলা পাল্টা হামলা রুপ নেয়। রক্তাক্ত আহত হয় ছাত্রদলের একাংশের নেতা তানজিন ইসলাম আদিত্য ও তার আত্মীয় আল-আমিন এবং কলেজের সভাপতি সাইফুল্লাহ খালিদ। পরে থানা পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে দুই পক্ষের আহতদের উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

কলেজের একাধিক সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির বিবামান দুই পক্ষ শক্ত অবস্থান নেয়। জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম দফায় উপজেলা বিএনপির সিনয়র যুগ্ন আহবায়ক নাফিজ আহমেদকে কলেজের সভাপতি মনোনয়ন দেয়। চলতি মে মাসের ১২ তারিখে জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় একই পদে সাইফুল্লাহ খালিদ রুমেলকে মনোনয়ন দেয়। সদ্য মনোনয়ন পাওয়া সভাপতি ম্যানিজিং কমিটির সভা ডাকলে বিপত্তি ঘটে।

হাসপাতালে আহত ছাত্রদল নেতা তানজিন ইসলাম আদিত্য জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ নিতে সে ও অন্যরা কলেজে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি নিতে গেলে সভাপতি তাদের বাধাদেয়। এক পর্যায়ে সভাপতি ও তার লোকেরা তাদের উপর হামলা করে। তাদের রক্তাক্ত আহত করা হয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

কলেজর পরিচালনা পরিষদের সদ্য মনোনিত সভাপতি সাইফুল্লাহ খালিদ রুমেল জানান, সদ্য বিদায়ী সভাপতি নাফিজ আহমেদ রাজু সব নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে তার আপন ভাই আব্দুল্লাহ খানকে কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়োগের বৈধতা নিয়ে মিটিং ডাকায় তার উপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মামলা করবেন না।

তিনি আরও জানান, এ দিন সকালে মিটিং করার জন্য উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলমের সাথে তিনি কলেজে প্রিন্সিপালের অফিসে যান। প্রিন্সিপালের অফিস তালাবদ্ধ থাকায় তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিসের দিকে যান। এ সময় বহিরাগতরা তার উপর হামলা করে। তিনি আত্মরক্ষায় একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। পরে আবার নাফিজ আহমেদ রাজুর নেতৃত্বে তার উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা করা হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যা ঘটেছে সবই বিএনপির রাজনৈতিক বিবাদের জের বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি নিজেকে পৌর বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য বলেও দাবি করেন।

সভাপতি সাইফুল্লাহ খালিদ

নাফিজ আহমেদ রাজু জানান, ছাত্রদলের নেতারা কলেজে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে অধ্যক্ষের কাছে অনুমতি নিতে গেলে সভাপতি সাইফুল্লা খালিদ ও তার ভারাটিয়া মাস্তানরা তাদের (ছাত্রদল নেতাদের) উপর হামলা করেন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মী রক্তাক্ত আহত হয়েছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে। মামলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ খান বলেন, তিনি কলেজের বাইরে ছিলেন। তবে শুনেছেন ছাত্রদলের নেতাদের একাংশ একটি রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি নিতে গেলে সভাপতি ও আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুল্লাহ খালিদ লোকজন নিয়ে তাদের উপর হামলা করেছেন।

তিনি আরও জানান, সাইফুল্লাহ খালিদ দীর্ঘ দিন আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। খোলস পাল্টে বিএনপির এক নেতার ঘারে ভর করে তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারনের চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন – ঝিনাইদহের ২১৩ কিশোরী এসএসসি পরীক্ষার আগেই বিয়ের পীড়িতে

খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নাঈমুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কলেজের সভাপতির ফোন পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে তিনি নিজেও ঘটনা স্থলে যান। আহতরে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনেন। কেউ মামলা দিলে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।