জেলা আঃলীগের সভপতিকে গ্রেফতার ও অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

0
37

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকে তুলে নিয়ে ঘরে আটকে নির্যাতান করার ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানকে গ্রেফতার ও দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শোমসপুর বাজারের অদূরের হালিমের ধানের চাতাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে মটোরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১ ঘন্টা পর আহত অবস্থায় তাকে আবার একই স্থানে রেখে যায়। এ ঘটনার সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে সংরক্ষিত আছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ১১ টায় খোকসা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চত্বর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল বেড় করে। তারা কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের খোকসা বাসষ্ট্যান্ডে এসে মানববন্ধন করে। প্রায় ৪৫মিনিট স্থায়ী মানববন্ধনে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক শত নেতা কর্মীরা অংশ নেন। তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান ও তার ভাই ভাতিজার নামে দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড করে আসামীদের গ্রেফতার ও দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলে ¯েøাগান দিতে থাকে।

এ কর্মসূচি চলাকালে নির্যাতনের শিকার উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় তার ছেলে থানায় লিখিত মামলা দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ মামলার প্রধান আসামী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের নাম বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ডের চেষ্টা করছে। পুলিশের এই আচরণের তিনি প্রতিবাদ জানন।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ যদি প্রধান আসামী সদর উদ্দিন খানকে বাদ দেয় তা হলে আর মামলা করবেন না। তার উপর হামলা ও ঘরে আটকে নির্যাতনের ঘটনায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ও আল্লাহর উপর বিচারের ভাড় ছেড়ে দেবেন।

মানববন্ধন চলাকালে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল আখতার, বেতবাচড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, আমবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সবিক খান টিপু, সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমরান হোসেন, মুনসী তাজবির আহম্মেদ রাজা, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাজা, আবু ওবায়দা শাফি প্রমুখ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আকতারের এক পথসভায় বক্তব্য রাখার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন জেলা আওযামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানকে প্রতিহত করার ঘোষানা দেন। এ ক্ষোভ থেকে তার উপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।

আহত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি শোমসপুরে হালিমের ধানের চাতালে আসেন। কিছু সময় পর বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাই ভাতিজারা ৩/৪টি মোটর সাইকেল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। সংগত কোন কারণ ছাড়াই তারা আলমগীরকে জোর করে মটোরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। তাকে জেলা সভাপতির বাড়ির দোতলার একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জেলা সভপতি নিজে তাকে (আলমগীরকে) শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। অস্ত্রের ভয় দেখায়। এভাবেই চলে ২৫/৩০ মিনিট।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আখতার তার বক্তব্যে বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর উদ্দিন খানের ভাই রহিম খান চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। এতে রাজি না হওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে জোর পুর্বক ধরে নিয়ে যায়। তাকে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান নিজে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। একই সাথে তার ভাই রহিম খানের অনুকুলে উপজেলা চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন করে দেওয়ার শপথ হিসেবে পবিত্র কোরআন শরিফে হাত রেখে কসম করানো হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আকতার এই হামলার ঘটনার সঠিক তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজেই সন্ত্রাসীর ভুমিকায় অবর্তিন্ন হয়েছেন। দলীয় কর্মীরা তার কাছে নিরাপদ নয়। তাকে দিয়ে জেলার রাজনীতি চলতে পারে না। তিনিও জেলা সভাপতির অপসারণ দাবি করেন।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননুর যায়েদ জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।