খোকসায় মহাশ্মশানের বটগাছ কাটা নিয়ে বিরোধ চরমে

0
150
শৈলডাঙ্গী মহাশ্মশানের গাছ।

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসার শৈলডাঙ্গী মহাশ্মশানের অর্ধ শতবছরের পুরতান বটগাছ কাটা কেন্দ্র করে জমিদাতা ও কমিটির দ্ব›দ্ব চরমে পৌচেছে। জমি দাতাদের অভিযোগ ধর্মী শাস্ত্র মোতাবেক লাগানো গাছ কাটে কমিটি অন্যায় করেছে।

জানা গেছে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একতারপুর ইউনিয়নের হাওড় নদীর তীরে এক জোড়া বট-পাকুর গাছ কেন্দ্র করে একাধিক জমিদাতার দানকৃত জমিতে শৈলডাঙ্গী মহাশ্মশান গড়ে ওঠে। শ্মশানের এই বট-পাকুড় গাছ কেন্দ্র করেই শ্মশান কালীপূজার প্রচলন হয়। চলতি বছরের প্রথম দিকে শ্মশানের উন্নয়নের ধুয়োতুলে দৃষ্টিনন্দন বিশাল গাছটির একাংশ কেটে ফেলা হয়। এরপর প্রতিবেশীদের অসুবিধার কথা বলে আর একটি অংশ কাটা হয়। শ্মশান কমিটর সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সম্প্রতি গোটা গাছটি কাটা শুরু করা হয়। সাধারণ সভা ছাড়াই অর্ধশত বছরের পুরাতন গাছটি কাটার অভিযোগ করেন প্রথম সারির জমিদাতা স্বপন কুমার সরকার। তারা দাবি করেন কমিটর সম্পাদক একাই গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের গ্রাম শৈলডাঙ্গী। একদিকে হাওড় নদী অন্যদিকে খোকসা- কলিমহর সড়কের গাঁ ঘেসে শৈলডাঙ্গী মহাশ্মশানের বট গাছ। গাছটি প্রায় কয়েক বিঘা জমিতে ছায়া দিত, কিন্ত কমিটি গাছটি কাটতে শুরু করেছে। প্রায় জনদশেক শ্রমিক রাত দিন গাছ কাটার কাজ করেছে। ইতোমধ্যে গাছটি মগডাল বাদে ৯০ শতাংশ কাটা শেষ হয়েছে। সোমবার দুপুরেও সাই সাই শব্দে করাত আর কুরাল চালাচ্ছিল শ্রমিকরা। তারাই জানালেন কমিটি লোকেরা গাছ কাটাচ্ছেন।

শ্মশানে দাড়িয়ে জমিদাতাদের একজন স্বপন কুমার সরকার বলেন, শ্মশানের নামে জমিদানের অনেক আগেই সনাতন ধর্মের বিধানমতে বট-পাকুড় গাছ লাগিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ বিশ্বাস ব্যক্তিগত লাভে বট গাছটি কাটতে শুরু করেছে। ১৮ গ্রামের সনাতন ধর্মের মানুষের সাথে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই গাছ কাটা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি এ বিষয়ে প্রতিটি পরিবারের লোকদের ডেকে প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানান। এ ছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবিবর রহমান হবি জানান, স্থানীয় বসতিদের অসুবিধান বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গাছটির আংশিক কাটার কথা শুনেছি। ধর্মীয় কারণে গাছটির একেবারে কাটার কথা না। তবে তিনি স্বীকার করেন গাছটি একটু বেশী কাটা হয়েছে।

কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ বিশ্বাস জানান, কমিটির অনুমতি নিয়ে গাছটি কাটা হচ্ছে।

মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি অমল কান্তি বিশ্বাস স্বীকার করেন সাধারণ সভার অনুমতি ছাড়াই তারা গাছের সামান্য কয়েকটি ডাল কেটেছেন। তাও আবার নাট মন্দির নির্মান করার সুবিধার জন্য।