ঠিকাদারের বিরুদ্ধে খালের মাটি বিক্রির অভিযোগ

0
153

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীন মাঝিপাড়া থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত খাল পুনঃখনন প্রকল্পের মাটি ইটভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, জেলার মাঝিপাড়া থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার খাল পুনঃখননের জন্য ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পেয়ে যায়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শুরু করা পুনঃখনন কাজ আগামী জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা।

কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অধিক লাভের আশায় দরপত্রের নির্দেশনা উপেক্ষা করে খালটি অতিরিক্ত গভীর করে মাটি বিক্রি করে চলেছে। খাল খননের মাটি খালের দুই পাড়ে না ফেলে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মাটি কাটার মহউৎসব। প্রতিনিয়ত ট্রাক ও লরি দিয়ে খননের মাটি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে খালে দুই পাশের রাস্তা ও ফসলি জমি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার খনন করা মাটি ট্রাক-লরি ভর্তি করে খালপাড়ে থেকে মকিমপুর গ্রামের পিচঢালা সড়কটি দিয়ে পরিবহন করায় রাস্তায়র বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গ্রামবাসীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

ঝিনাইদহের চরমুরারিদহ গ্রামের বাসিন্দা সীতা রানী জানান, অপরিকল্পিত খাল খননের কারণে তিনি ঘর-বাড়ি নিয়ে আতঙ্কে আছেন। ঘর ধসে খালে চলে যাওয়ার ভয়ে তিনি বাড়িতে থাকতে পারছেন না।

হরিণাকুন্ডুর মোকিমপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, এখন রাতে খালের মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে খননের ফলে খালটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তিনি আরও জানান, খননের নামে মাটি বিক্রি করে দেওয়ার কারণে খালের দুই পাশে কোনো প্রকার পাড় রক্ষা বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে না।

আতিয়ার রহমান ও ঝন্টু লস্কর অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, ঠিকাদার ও সরকারী দলের কতিপয় নেতারা খালের মাটি বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

ঠিকাদার রইচ উদ্দিন বলেন, ‘খননের মাটি খালের দুই পাশে রাখার জায়গা না থাকায় আমরা বিক্রি করছি। এছাড়া এই মাটি না সরালে খালের পাড় ঢালু করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, আমরা ঝিনাইদহ সদর ইউএনওর সম্মতি নিয়েছি। ক্রেতারা মাটি কেনার জন্য ট্রেজারির মাধ্যমে টাকা জমা দিচ্ছেন।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, বিভিন্ন স্থানে খালের উচ্চতার তারতম্য রয়েছে। সেই অনুযায়ী খনন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা প্রতি ঘনফুট ৭০ পয়সা দরে অতিরিক্ত মাটি বিক্রি করে দিচ্ছি।