প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার চেকটি পাওয়া গেলো, বিলকিসের চিকিৎসার সময় ফুরিয়ে

0
82

যশোর প্রতিনিধি

নাতনির চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তার আবেদন করেছিলেন, যথাসময়ে চেকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয় ওই রোগীর নামে। কিন্তু একজন প্রতিমন্ত্রী সেই চেক আটকেদেন। এদিকে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় বিলকিস খাতুন মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকেন।

বাবা-মা মরা নাতনি বিলকিস খাতুনের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেন করেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গাঙ্গুলিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মশিউর রহমান। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২৩ আগস্ট ওই রোগীর নামে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক পাঠানো হয়। কিন্তু আবেদনকারী সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার নামে কোন চেক আসেনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সহায়তার চেকটি আটকে রেখেছেন। গত ৯ নভেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিলকিস খাতুন মারা যান।

রবিবার যশোর প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সাবেক ইউপি সদস্য মশিউর রহমান। তিনি উপজেলার রোহিতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ইউপি সদস্য মশিউর রহমান অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার চেক ২৩ আগস্ট যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চলে আসে। কিন্তু সেই চেক আটকে রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। প্রায় দুই মাস পর ২৯ অক্টোবর রোগীর লোকদের দিয়ে সাদা কাগজে স্বার নিয়ে চেকটি দেওয়া হয়। ততদিনে টাকার অভাবে নাতনির যথাযথ চিকিৎসা করাতে পারেন না বৃদ্ধ মশিউর রহমান।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার চেক আমি পাবো জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে। সেই চেক কেনো প্রতিমন্ত্রী দুই মাস আটকে রাখবে? আর তার কারণেই টাকার অভাবে আমার নাতনির চিকিৎসা করাতে পারেন নি। যখন তাকে চেকটি দেওয়া হয়েছে তখন তার নাতনির চিকিৎসার সময় ফুরিয়ে গেছে।

প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, চেক দিতে কয়েকদিন বিলম্ব হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু মশিউরের অভিযোগ অবান্তর ও উদ্দেশ্যমূলক। মশিউর একটি স্কুলের সভাপতি থাকা কালে প্রতিষ্ঠানের দুইটি কম্পিউটার বিক্রি করে দেন। সেই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে তিনি বিষয়টিকে নিয়ে নাটক সাজাচ্ছেন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কি কারণে তার টাকা আটকাতে যাবো? এমন আরও চেক এসেছে অন্য কারো তো চেক আটকালাম না। মশিউরের চেক কেন আটকাবো? তার অভিযোগ মিথ্যা।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বিলবিস খাতুন যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের মৃত জাকিরের মেয়ে। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে নানা মশিউরের বাড়িতেই বড় হন বিলকিস।