কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
করোনার উপসর্গ নিয়ে দু’দিন ধরে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট এনডিসি এবিএম আরিফুল ইসলাম।
বৃদ্ধকে হাসপাতালে পাঠানোর পর রোববার রাতে তিনি তাঁর ফেসবুক পেজে অসুস্থ ওই বৃদ্ধকে নিয়ে ভিডিও চিত্রসহ আবেগঘন একটি স্ট্যাটার্স দিয়েছেন। যা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
দু’দিন ধরে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা বৃদ্ধকে উদ্ধার করে ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের এই মানবিকতার বিষয়টি সবাই প্রশংসা করে নানা ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

করোনা ভীতি ও মানবিকতা!!! শিরোনামে নিজের ফেসবুক পেজে পোষ্ট দেয়া ওই স্ট্যাটার্সে তিনি লিখেছেন- কুষ্টিয়া জেলা শহরের পুলিশ লাইন্স এলাকার এম আর এস তেল পাম্প সংলগ্ন রাস্তার পাশে একটি লোক জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় দুইদিন ধরে পড়ে আছে। ব্যক্তিটি এতটাই অসুস্থ যে তার নাম-পরিচয় পর্যন্ত বলার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। কেউ তার পাশে যাচ্ছে না। ব্যক্তিটি নির্বিকার মানুষের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে আছে। পৃথিবী নামক এই মহারাজ্যে যেখানে মানুষই সব সেখানে করোনা নামক এক ভীতি মানুষের সব মানবিক গুণগুলোকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে। যেনো মানবিকতার কোনো আহ্বানই কারো কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না। এমনকি নিদারুণ মৃত্যু চিৎকারও মানুষ নির্লজ্জ স্বার্থপরের মত শুনে না শোনার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই যেটুকু বুঝতে পারলাম মূলত করোনা ভীতি থেকেই কেউ ব্যক্তিটির কাছে যেতে সাহস করছে না। লোকটির সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তার চিকিৎসার জন্য সর্ব প্রথম কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ তাপস কুমার সরকার মহোদয়ের সাথে ফোনে কথা বলি। আরএমও মহোদয় হাসপাতালে পাঠাতে বলেন। লোকটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত তার চিকিৎসার সকল খোঁজ-খবর রাখছি। চিকিৎসা চলমান রয়েছে। লোকটি জ্ঞান ফিরে পাওয়া মাত্রই তার পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার জানান, প্রায় ৫৫-৬০ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর বর্তমানে তার সংজ্ঞা ফিরেছে। না খাওয়া-দাওয়ার কারণে শরীর খুবই দুর্বল। সংজ্ঞা ফিরলেও তেমন একটা কথা বলতে পারছেন না। দু’একটা যাও বলছেন তাও অসংলগ্ন। শরীরে জ¦র, কাশি রয়েছে। অজ্ঞাত ওই বৃদ্ধের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তার খোঁজে হাসপাতালে কেউ আসেনি।