কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
বাংলা সাহিত্যের অমর কথাসাহিত্যিক ও বিষাদসিন্ধু রচিয়তা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৬ জন্মবার্ষিকী উপল্লক্ষে দুই দিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়াস্থ বাস্তু ভিটায় গ্রাম – বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন।
সোমবার বিকাল ৪ টায় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান মালার শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়েদ, কবি ও সাহিত্যক আলম আরা জুঁই, কুষ্টিয়া প্রেসকাবের সভাপতি আল মামুন সাগর প্রমুখ।
ইউএনও বিতান কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে মীর মশাররফ হোসেনের জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর মুখ্য আলোচক ছিলেন করেন লেখক ও গবেষক ড. আমানুর আমান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করবেন, জেলা ও উপজেলা শিল্পকলা এবং লালন একাডেমির শিল্পীরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কবির বাস্তুভিটায় গ্রাম – বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন। বসেছে গ্রামীণ মেলা।
কুমারখালী বিজয় নাট্যগোষ্ঠীর পরিবেশনায় কবির লেখা ‘জমিদার দর্পণ’ নাটক মঞ্চায়নের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দুইদিন ব্যাপী এ আয়োজন।
মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যকর্ম রচনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। ভারতী, সংবাদ প্রভাকর, মিহির, হাফেজ, আহমদী, নবরতœ প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। ধর্মীয় শিার পাশাপাশি বাংলা ও ফারসি ভাষা রপ্ত করেন তিনি। ধর্ম, আইন, প্রবন্ধ, ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা, নাটক, গান ও উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। এরমধ্যে কোরআন, শাহনামা, গুলিস্তা, কাসাসুল আম্বিয়া, রামায়ন-মহাভারত, বিদ্যাসুন্দর দাশরথী রায়ের পাঁচালী, বানভট্রের কাদম্বরী উল্লেখযোগ্য।
১৮৬৯ সালে লেখা মীর মশাররফ হোসেনের “রতœবতী” উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর তাঁর অমর সৃষ্টি ১৮৮৫ সালে লেখা “বিষাদ সিন্ধু” এ ছাড়া উদাসীন পথিকের মনের কথা, রাজিয়া খাতুন, তহমিনা, বাঁধাখাতা, বধূমাতাও উল্লেখ্য। তার রচিত নাটক বসন্তু কুমারী ও জমিদার দর্পণ আমাদের বাংলাসাহিত্যে এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে।
তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল মীর মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতার নাম ছিল দৌলতন নেসা। তিনি ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।