ভয় আর শঙ্কায় নিহত মাহাবুবের বাবা-মা

0
46

স্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুব রশিদের বাবা-মায়ের রায় নিয়ে আর প্রতিক্রিয়া নেই। তবে, আছে ভয় আর শঙ্কা। কি বলতে কি বলে ফেলবেন আর এ নিয়ে পরতে হবে বিপদে। আগের সরকার যা করেছেন তার মত করেই করেছে। আর এ সরকার যা করছে তাদের মত করে করছে। ছেলে হত্যার বিশ বছর পার হয়েছে বিচার পান নি। এখন আর কী হবে এ নিয়ে কথা বলে।

রবিবার ২১ আগস্টের গ্রেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স সহ আপিলের রায় হয়। রায়ে সব আসামীর খালাস পায়। গ্রেনড হামলায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষি নিহত মাহাবুব রশিদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে। তার বৃদ্ধ বাবা হারুন অর রশিদ ও মা হাসিনার খাতুনের প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।

তখন বিকাল ৫টা। বাঁশ বাগানের আঁধার পেরিয়ে মাহাবুবের বাবার বাড়ি। বাড়ির ভেতরে শুনসান নিরবতা। গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদ বাড়ির উঠানে একা একা বসেছিলেন। মা ছিলেন ঘরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। বাবা বাজারে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু গায়ে জ্বরটা চেপে বসায় আর যাওয়া হয়নি তার। মা বিছানায় শুয়ে ছেলের চিন্তা নিয়েই মগ্ন ছিলেন। উঠে এসে বসলেন স্বামীর পাশে।

রবিবার উচ্চ আদলতের রায়ের কথা তাদের কেউ জানায়নি। তিনি ছেলের বাবার শুরেই বললেন। “বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কি হবে ? যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আবার কিছু দিন ঘুরুক ফিরুক।”

৮৫ বছরের বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, “আমার নিয়ে যেন মিথ্যা কথা বলা বা লেখা না হয়। আমি বলব এক রকম আর আপনা লিখবেন অন্য রকম। আগের বিচার “সে” এক রকম করেছে । এখন বিচার হয়েছে অন্য রকম। রায় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হা না কিছুই বলবোনা। সত্য বলে যদি আমার জেল ফাঁস হয়, হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যা বলবো না, তা লিখবেন না। তিনি আরও বলেন, বিচারের রায় দিয়ে আমার আর কিছুই যায় আসে না। সে করে গেছে এক রকম এরা করছে আর এক রকম। এর পরে আর একজন এসে করবে আর এক রকম।” বৃদ্ধ হরুন অর রশিদ দম্পতি ভয় আর শঙ্কার কথাও জানান।

আরও পড়ুন –খোকসায় আগ্নেয় অস্ত্রসহ শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আটক

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের মধ্যে সাবেক এ নেতার দেহরক্ষি সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুব সহ দলটির নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

আরও পড়ুন – পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবারে ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা পাওয়া গেলো

মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দন্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি শুরু করে।