খোকসায় সারের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ

0
79

ষ্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় সরকার নির্ধারিত দামে সার পাবার দাবিতে কৃষকরা বিক্ষোভ করেছে। সরকারি সারের বরাদ্দ ও প্রয়োজনের কোন তথ্য নেই কৃষি কর্মকর্তার কাছে।

মঙ্গলবার সকালে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠ থেকে কৃষকরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারী কৃষকরা উপজেলা পরিষদে ঢুকে বিক্ষোভ করতে থাকে। কিছু সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিক্ষোভকারী কৃষকদের সাথে কথা বলেন। তিনি ১০জন কৃষক প্রতিনিধির সাথে আলোচনা করার জন্য ডাকেন। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী বৈঠক করেন। পরে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের সরকারি দামে সার বিক্রির প্রতিশ্রæতি দেন।

উপজেলা শিমুলিয়া, জানিপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মালিগ্রাম, শিমুলিয়া ,মানিকাট, কমলাপুর, নারায়ণপুর, বশয়াসহ প্রায় ১২ টি গ্রামের কয়েকশ কৃষক বিক্ষোভে অংশ নেন।

উপজেলা কৃষিকর্মকর্তার জানা নেই রবি ফসল, পেঁয়াজ, ভুট্টা ও বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্র। বলতে পারেনি এ মৌসূমে কতটন সারের প্রয়োজন। বিএডিসি বা বিএসটিআই এর ২১ জন ডিলালের জন্য কি পরিমানের রাসায়নিক সার সরকারি ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বৃদ্ধ কৃষক ইয়ার আলী দাবি করেন, সরকারের অনেক ডিলার আছেন যারা সার মজুত করে কৃত্রিম ভাবে সারের সংকট সৃষ্টি করেছেন। সরকারি ভাবে এক কেজি ফসফেট সারের দাম ২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই সার এক কেজি ৪৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বাংলা ড্যাপ সার ২৭ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাও আবার দিনের বেলায় সার মেলে না। রাতের আধারে দুই তিন গুন চড়া দামে সার নিতে হচ্ছে।

কমলাপুরের কৃষক আরিফ জানান তিনি পেঁয়াজ আবাদের জন্য ঋনের টাকায় ৭ বিঘা জমি ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু সারের অভাবে জমি আবাদ করতে পারছে না। তার পেঁয়াজ আবাদ বিলম্ব হচ্ছে। সারের অভাবে তিনি সব হারাতে বসেছেন।

বিএডিসির ডিলার আসাদুজ্জামান। তিনি জেলা সদরে বসবাস করেন। তার প্রতিনিধি অজিৎ কুমার মহাজন জানান, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বিএডিসির ১১ জন ডিলার প্রায় ৫৩৩৬ বস্তা টিএসপি ও এমওপি সারের ডিও করেছেন। এ সময় বিএনটিআই এর ১০জন ডিলার সমপরিমান রাসায়নিক সার ডিও করেছেন। যা দিয়ে খোকসার সব জমি ঢেকে দেওয়া যায়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সারের সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, অনেকে অধিক মুনাফার আশায় এ পরিস্থিতর সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও স্বীকার করেন, দুইজন ব্যবসায়ীর হাতে ৯টি ডিলার শিপ রয়েছে।

আরও পড়ুন – খোকসায় মহান বিজয় দিবস পালিত

উপজেলা কৃষি কর্মকতা আব্দুল্লাহ আল নোমান মুঠোফোনে বলেন, সারের সংকট হয়েছে তা তার জানা নেই। তিনি জানেন না রবি ফসল, পেঁয়াজ, ভুট্টা, বোরো ধান আবাদে এ মৌসূমে কত মেট্রিক টন সারের প্রয়োজন হতে পারে। তবে পরে জানাবেন বলে ফোন ছেড়ে দেন।

আরও পড়ুন – রমজানে ভোজ্য তেলে ভ্যাট কমিয়েছে সরকার

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দিপন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কৃষকদের সামনে হাজির হয়ে বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে উপজেলা ২৯টি পয়েন্টে কৃষকদের মধ্যে সরকারি বরাদ্দের সার সরবরাহ নিশ্চিত করবেন। তিনি আরও জানান, সার সংকট নিয়ে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেন নি।