সাংবাদিকতা করবেন না ভ্যানচালক রেজাউল

0
41

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

ভ্যান চালক রেজাউল ইসলাম (২২)। প্রাথমিকের গন্ডিও পার হতে পারেননি। কিন্তু সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছে জেগে তার। ইতোমধ্যেই একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। সেই নিউজ পোর্টালটি তাকে ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ পদমর্যাদা দিয়েছে।

লাভজনক ভেবে নেওয়া পদটি রেজাউলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। সাংবাদিকতা করবেন না জানিয়ে ওই অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছেন আইনি নোটিশ।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী মো. নাজমুল হক লিটনের মাধ্যমে দেনিক দেশ বুলেটিন নামক ওই অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি। রেজাউল ইসলাম পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামের কাসেম মন্ডলের ছেলে।

আইনি নোটিশে আইনজীবী মো. নাজমুল হক লিটন বলেন, আমার মক্কেল একজন গরিব ভ্যান-রিকশাচালক। গত ২৪ ফেব্রæয়ারি সহজ সরল মনে না বুঝিয়া একটি সাংবাদিক নিয়োগ ফরমে নাম লিখে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি দৈনিক দেশ বুলেটিন এর পক্ষে একটি নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড প্রদান করেন।

আমার মক্কেল সাংবাদিক হবার মতো কোনো অভিজ্ঞতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। উক্ত কারণে আপনাকে জানানো যাইতেছে যে, আমার মক্কেল উক্ত দৈনিক দেশ বুলেটিন নামক পত্রিকার সাংবাদিক হতে ইচ্ছুক নহে।

জানা গেছে, দৈনিক দেশ বুলেটিন নামক অনলাইন নিউজ পোর্টাল গত ২৪ ফেব্রæয়ারি ভ্যানচালক রেজাউল ইসলামকে বিশেষ প্রতিনিধি (রাজবাড়ী) পদবী দিয়ে একটি নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান করে। নিয়োগপত্রে বলা হয়, আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে আপনাকে বিশেষ প্রতিনিধি রাজবাড়ী এর সংবাদ পাঠানো অনুমতি দেওয়া হলো।

আপনার নিউজ লেখার মান, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিষয়ে দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা এবং দায়িত্বশীলতা পর্যবেক্ষন করা হবে। ২৪ ফেব্রæয়ারি ২০২৫ হতে আপনি বিশেষ প্রতিনিধি রাজবাড়ী এর চলতি ঘটনাবলিসহ অন্য যে কোনো ধরনের নিউজ পাঠাতে পারবেন।

ওই নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্রের ছবি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে নিজেই নিজেকে অভিনন্দন জানান রেজাউল। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে নানা সমালোচনা তৈরি হয়। ভ্যানচালক হঠাৎ করে কিভাবে সাংবাদিক হয়ে গেল এমন মন্তব্যও করেন অনেকে। এরপর বিভিন্নস্থান থেকে ফোন আসতে শুরু করে রেজাউলের কাছে।

রেজাউল বলেন, আমি দেশ বুলেটে (দেশ বুলেটিন নামটি উচ্চারণ করতে পারেননি তিনি) ইন্টারভিউ দিছিলাম। এহন বিভিন্নজন আমার ফোন করতেছে। আমিকি ইন্টারভিউ দিয়ে মামলা খায়া গ্যালাম নাকি। আমার মাথা হ্যাং হয়া গিছে। আমি একজন ছোটলোক (ছোট মানুষ)। আমি বিশেষ ্রপতিনিধি কি বুঝি না।

আমার আপন চাচতো ভাই এএসটিভি লাইভের (একটি ফেসবুক পেজ) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তার সাথে থাইক্যা আমি কিছুডা কিছুডা কাজ শিখছি। তারপর দেশ বুলেটে ইন্টারভিউ দিছিলাম। এহনতো দেখতিছি বিপদে পইড়্যা গেলাম।

আরও পড়ুন – পাঠশালা

আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে রেজাউল বলেন, আমি উকিল নোটিশ পাঠা দিছি। আমি আর সাংবাদিকতা করবো না।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দেশ বুলেটিনের ওয়েবসাইটে দেওয়া টেলিফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।