স্টাফ রিপোর্টার
জনতার বাধায় গড়াই নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলকারী ব্যবসায়ীর ড্রেজার ও নৌকা পিছু হটলো। তবে ব্যবসায়ী ও নৌকার মালিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদলত।
কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীর পূর্বতীর রক্ষার শতকোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা বাঁধের ৫০ গজ দূর থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নামধারী ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিনের মত সোমবার সকালে জানিপুর গ্রামের নদীর তীর রক্ষা বাঁধের নিচে থেকে এক বালু ব্যবসায়ী ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। এ সময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির এক নেতা ও এলাকাবাসীরা ড্রেজার চালকদের ধাওয়া করে। এর কিছু সময় পর দ্বিতীয় দফায় নদীর একই স্থানে একই মালিকের ড্রেজার মেশিন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে। এ সময় নদী তীরের বাসিন্দাররা স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে অবহিত করে। এক পর্যায়ে বেলা ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম কে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমান করেন।
উপজেরা রাজস্ব অফিসের অফিস সহকারী লোকমান হোসেন জানান, গড়াই নদীর খোকসা অংশের ওসমানপুর, হিজলাবট, বামনপাড়া, মুকশিদপুর, চাঁদট, ও হিজলাবট বালিমহল ইজারা হয়ে থাকে। অজ্ঞাত কারণে এ বছর এসব বালিমহল ইজারা হয়নি।
সূত্রটি আরও জানায়, গড়াই নদী থেকে বালি উত্তোলনের দায়ে সোমবার “বালিমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা ২০১০ এর ১৫/১ ধারা মোতাবেক বালু ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিমকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির নেতা মোস্তাফিজুর মোস্তাক জানান, তারা একটি কবর স্থানের জন্য নদী থেকে সামান্য কিছু বালু তুলেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল হামিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বাঁধারে বিভিন্ন স্থান থেকে বালি তুলে বিক্রি করছে। সোমবার সকালে তিনি নিজে এলাকাসীদের সাথে হাকিমের ড্রেজার মেশিনের লোকদের ধাওয়া করেন। প্রথমে এক নৌকা বালি নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। বেলা ১০ টার দিকে দ্বিতীয় দফায় বালুকাটার জন্য আবার ড্রেজার নিয়ে আসে। এসময় বাধ্য হয়ে প্রথমে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন দেওয়া হয়। তবুও বালু কাটা বন্ধ হয়নি। সন্ধ্যায় এ রিপোট লেখা পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা চলছিল।
বালু ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম নদী থেকে বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। তবে তাকে গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে জরিমানা করায় তিনি কষ্ট পেয়েছেন।
আরও পড়ুন – বিএনপির অফিসে অগ্নি সংযোগের মামলায় দুই জন আটক
গড়াই নদী থেকে বালি উত্তোলনের বিষয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুনের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠো ফোনে কল করা হয়। খুদে বার্তা দেওয়া হয় তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
আরও পড়ুন – হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দিপনের সাথে কথা বলার জন্য তার সরকারী মুঠো ফোনে কল করা হয় তিনিও ফোন রিসিভ করেনি।তবে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দিপন মোবাইল ফোনে কলব্যাক করে জানান, নদীর তীর রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বৃহৎ বাঁধ রয়েছে। অনেক মানুষের বসতী নদী তীরে। রয়েছে বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে বালু তুলবেনা বলে ওই ব্যবসায়ী মুচলেকা দিয়েছেন। তাকে জরিমানও করা হয়েছে।