স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার খোকসায় বিএনপির নেতাদের বাধার মুখে ভিজিডি সুবিধার জন্য নিবন্ধন কারীদের (আবেদন কারীদের) যাচাই বাছাই স্থগিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। উদ্যোগতার বিরুদ্ধে নিবন্ধনের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ।
শনিবার (১২ জুলাই ) সকালে উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভিজিডি ৩০ কেজি চাউলের কার্ডের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন কারীদের (আবেদন কারীদের) যাচাই বাছাই শুরু করে বিধি অনুযায়ী গঠিত ১৯ সদস্যের কমিটি। প্রায় ১৫ শ নারী আবেদন কারীরা ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন। সুবিধাভোগীদের যাচাই বছাই কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতারা রয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে বাধাদেয়ন বিএনপির স্থানীয়নেতারা। এক পর্যায়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মধ্যস্ততায় বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতাকে নিয়ে যাচাই বছাই শুরু হয়। সেখানেও বাধা হয়ে দাড়ায় প্রভাবশালী ওই নেতা। দুপুর ১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে যাচাই বছাই স্থগিত করেন।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিয়নে ২৩৭ জন ভিজিডি প্রকল্পের আওতায় মাসিক ৩০ কেজি চাউল পাবেন। এর জন্য ২০ জুন পর্যন্ত অনলাইনে ৬৯৬ জন নিবন্ধন করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগতা সালাউদ্দিন মিঠুন প্রায় ১৫শ নারীর কাছ থেকে নিবন্ধন করে দেওয়ার কথা বলে প্রতিজনের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২শ টাকা নিয়েছেন। এদের মধ্যে নিবন্ধন হয়েছে ৭ শ জনের। বাঁকীরা বাদ পরেছে। নিবন্ধেনে বাদ পড়ারা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেন।
৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেলিনা খাতুন। তার দুই সন্তান ঢাকায় পড়া-লেখা করে। সেও নিবন্ধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগ সালাউদ্দিন মিঠুনকে ২শ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার নিবন্ধন হয়নি। একই অভিযোগ করেন মরিয়ম খাতুন, জায়দাসহ প্রায় অর্ধশত নারী।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ বলেন, ভিজিডি যাচাই বাছাই কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগ করেন। তাদের রেখে যাচাই বাছাই করলে সঠিক হবে না। তাই তারা আওয়ামী লীগ ও তাদের দোষরদের বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন মাত্র।
ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগক্তা তার ক্ষমতা ব্যবহার করে বিএনপি পরিবারের সদস্যদের নাম নিবন্ধন করেনি। ফলে বিএনপি পরিবার ও তাদের সমর্থকরা ভিজিডি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর আবু একই অভিযোগ করেন। তার দাবি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত দুস্থদের যাচাই বছাই করতে হবে। তার আগে যাচাই বছাই কমিটির সদস্যদের বাদ দিতে হবে।
ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগক্তা সালাউদ্দিন মিঠুন জানান, তারা ইউনিয়ন পরিষদের বেতন বিহীন কর্মচারী। উপজেলা ব্যাপী নির্ধারিত আবেদন ফি ১০০ টাকা নিয়ে আবেদন করেছেন। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে তাদের নিবন্ধন হাতে হাতে করে দেওয়া হয়েছে। মেম্বরা ৫০ জনের কাছ থেকে টাকা ও কাগজ নিয়েছে কিন্তু তার কাছে ১০ জনের কাগজ দিয়েছে। এর জন্য সে দায়ী নয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেসমা খাতুন বলেন, তিনি বাইরে আছেন। মুঠো ফোনের কথা বুঝতে পারছেন না। পরে কথা বলবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তা প্রদীপ্ত রায় দীপন ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেন। পরে উপস্থিত নারীদের সামনে বাচাই বছাই স্থগিত করার ঘোষনা দেন।
আরও পড়ুন – কলা পাতায় ছিন্নি
ওই কর্মকর্তার সাথে মুঠো ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানোন, অভিযোগের গ্রহনযোগ্যতা নেই। মেম্বররা প্রতারণা করলে মামলা হতে পারে। পরবর্তী নির্দেশনা চুড়ান্ত হয়নি।