স্টাফ রিপোর্টার
পোড়াদহ- রাজবাড়ী রেল রুটের খোকসায় একটি ঝুকি পূর্ণ রেল ক্রসিং এ গেট ও গেট ম্যানেসর দাবিতে রেল লাইন অবরোধ করে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। এ সময় তিনটি ট্রেনের প্রায় এক হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় থেকে ১০টা ৪০মিনিট পর্যন্ত খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের ধুসুন্ডা গ্রামের রেল
ক্রসিং লাল কাপড় ও গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে গ্রামবাসী। এ সময় দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা পোড়াদাহ গামী সাটেল ট্রেনটি আটকে দেয় তারা। অবরোধের ফলে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা টুঙ্গিপাড়া গামী মধুমতি এক্সেপ্রেস ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহী গামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিও খোকসা ও পাংশা ষ্টেশনে যাত্র বিরতি দিয়ে অপেক্ষা করে। আটকা পরা তিনটি ট্রেনের এক হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন।
অবরোধে পরা সাটেল ট্রেনের পরিচালক আবু নাইম ও চালক সুরুজ আলী বিক্ষোভ কারীদর শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয়রা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকে। প্রায় এক ঘন্টা ৩৫ মিনিট পর খোকসার ষ্টেশন মাষ্টার সুজন সরকার ঘটনা স্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলে আটক সাটেল ট্রেনটি পাস করান। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন গুলোও গন্তব্যে যাত্রা করে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঈশ্বরদী থেকে ভবানীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার পাকা সড়কটি ধুসুন্ডা গ্রামের মধ্যে পোড়াদহ – রাজবাড়ী রেল লাইন ক্রস করেছে। গেট না থাকায় এটি দুর্ঘটনা প্রবণ এ রেল ক্রসিংএ পরিণত হয়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে এই ক্রসিংএ ট্রেনের সাথে সংঘর্ষে মোটর সাইকেল আরহী ব্যাবসায়ী সোনাই মোল্লা ও অপর এক অজ্ঞাত পরিচয়ের মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গত ৫ বছরের এই রেল ক্রসিং এ বিভিন্ন যানবাহনের সাথে প্রায় ১৫ টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় অনেক যানবাহনের যাত্রী পঙ্গু হয়েছেন। স্থানীয়রা ঝুকিপূর্ণ এই রেল ক্রসিংএ গেট ও গেট ম্যানের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষনা দিয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সোহাগী নামের এক নারী বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগে সোনাই মারা যাওয়ার পর থেকে আশে পাশের তিন চারটি গ্রামের মানুষ আতঙ্কে আছেন। শিশুরা রেল পার হয়ে স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। তারা দ্রæত এই ক্রসিংএ গেটের দাবি করেন।
নিহত সোনাই মোল্লার ভাই বাবু মোল্লা বলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যুতে ৫ বছরের শিশু এতিম হয়েছে। নিহতের স্ত্রীর গর্ভের সন্তান তার বাবাকে দেখতে পেলো না। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য তিনিও এখানে রেল গেট ও একজন গেট ম্যানের দাবি করেন।
খোকসা রেল ষ্টেশনের মাষ্টার সুজন সরকার বলেন, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে। তারা লিখিত স্মারক লিপি অথবা আবেদন দিলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বরাবর পাঠানো হবে। তারা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেবেন।
পোড়াদহ-রাজবাড়ী রেল রুটের জুনিয়র ট্রাফিক ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা স্থলটি দুর্ঘটনা প্রবণ বলে শুনেছেন। এলাকাবাসী লিখিত দিলে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। ঘটনা স্থল ও পৃথক ষ্টেশন গুলোতে ট্রেন আটকা পরায় বড় ধরনের জন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।