কুষ্টিয়ায় পাঁচজন করোনায় আক্রান্ত-অগ্রণী ব্যাংক লকডাউন

0
136
লকডাউনকৃত অগ্রণী ব্যাংক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংকের পাঁচ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় এবার কুষ্টিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কুমারখালী শাখা লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে উপজেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীবুল ইসলাম খান ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখা লক ডাউন ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে পাঁচ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও মুনাফা লাভের আশায় কোরবাণীর ঈদকে সামনে রেখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উক্ত শাখার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছিল।

আরও দেখুন –খোকসায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
অগ্রণী ব্যাংক কুমারখালী শাখার ম্যানেজার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন (এসও) হাসেন আলী। করোনা উপসর্গ থাকায় ২ জুলাই হাসেন আলীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরের দিন ৩ জুলাই তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।

এর পর ৬ জুলাই ব্যাংকের আরেক কমর্কর্তা (পিও) ইমতিয়াজ জামানের করোনা শনাক্ত হয়। পর পর দুজন কর্মকর্তার করোনা শনাক্ত হওয়ায় ব্যাংকের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা করা হয়।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার একই শাখার আরও তিন জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। অপর তিন জন করোনারোগী হলেন- অফিসার ক্যাশ তরুন হোসেন, মাঠ সহকারী মুস্তাক আহমেদ এবং ঝাড়–দার নাসিমা খাতুন। আক্রান্তদের পাশাপাশি ব্যাংকের আরও দু’একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীও অসুস্থ এবং তাদের শরীরেও করোনা উপসর্গ রয়েছে।

জানা গেছে, ব্যাংকের উক্ত শাখায় ৪ জন আনসার সদস্য দিয়ে মোট ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। শাখার ৫ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে শাখার ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মুনাফা লাভের আশায় কোরবাণীর ঈদকে সামনে রেখে উক্ত শাখার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছিল।

ব্যাংকটির উধ্বর্তন কর্মকর্তারা যে কোন মূল্যে শাখাটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। আতংকে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাংকে আসতে অপারগতা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের দিয়ে জোর পূর্বক ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন।

অগ্রণী ব্যাংকের কুষ্টিয়া জেলার ডিজিএম ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, আমরা চাইনা ব্যাংকটি লক ডাউন করা হোক। আমরা সীমিত পরিসরে হলেও শাখা চালু রাখার পক্ষে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কেন, কেউই কোন ঝুঁকি নিতে পারে না। আর আমরা তা কোন অবস্থাতেই মেনে নেব না।

কুমারখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি ডাঃ আকুল উদ্দিন বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাচ্ছিল ব্যাংকের শাখাটি সীমিত পরিসরে হলেও চালু রাখতে। কিন্তু ব্যাংক খোলা থাকলে গ্রাহকরা আসবেই। কোন অবস্থাতেই তাদের ঠেকানো যাবেনা। এক্ষেত্রে গ্রাহক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবারই স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। যে কারণে আমরা ব্যাংকের শাখাটি লক ডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কুষ্টিয়ার পূবালী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাকের পোড়াদহ শাখাটিও লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।