কুষ্টিয়া- রাজবাড়ী অঞ্চলিক মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা

0
192

কুমারখালী প্রতিনিধিঃ

কুষ্টিয়া- রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে দিনে দিনে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। জেলার চৌরহাস মোড় থেকে খোকসা উপজেলার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার ২৮ কিলোমিটার অংশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। এতে প্রাণহানিসহ পঙ্গুত্ববরণ করছেন অনেকেই। সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যস্ততম এই সড়কটির দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ দাবী করছেন স্থানীয়রা।

প্রায় এক বছর হতে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়া ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কটির সম্প্রসারণ সহ উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছে। ইতিপুর্বে এই সড়কটির প্রসস্থ ছিল ১৮ ফিট, কিন্তু বর্তমানে সড়কটি ২৪ ফিট প্রসস্থ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে সড়কটির দৈন্যদশার কারণে। কিন্তু এখন সড়কের পরিস্থিতি ভালো হওয়া সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটছে যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও অবৈধ যানবাহন চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে।

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের কুমারখালী উপজেলার কালুমোড় নামক স্থানে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। কয়েকদিনে এই স্থানে অবৈধ নছিমন পরিবহনের সাথে মাহিন্দ্র পরিবহনের সংঘর্ষে ১ জন নিহত সহ ১২ জন আহত হয়েছে। একই দিনে খোকসা উপজেলার অংশে অবৈধ নছিমন পরিবহনের সাথে সিএনজি পরিবহনের সংঘর্ষে দুইজন গুরুত্বর আহত হয়েছে। এমন দুর্ঘটনার খবর প্রায় প্রতিদিনই পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই সড়কের উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর থেকে সব ধরণের যানবাহন চলাচল করছে অতিরিক্ত গতিতে। তাই বলা যেতে পারে বর্তমানে সড়কের গতি বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে অবৈধ পরিবহনের সংখ্যাও। আর তাই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনাও।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন এই সড়কটির পরিস্থিতি ছিল খুবই খারাপ। যে কারণে ছোট-বড় সব ধরণের পরিবহনগুলোকে চলাচল করতে হতো ধীর গতিতে। আর তা সত্বেও সে সময়ে এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তখন কুষ্টিয়ার চৌরহাস থেকে খোকসা উপজেলার শিলায়ালডাঙ্গী পর্যন্ত এই সড়কে হাজারো ছোট-বড় গর্ত ছিল। আর তাই চাকা গর্তে পড়ে কখনো কখনো যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িগুলো উল্টে খাদে পড়ে যেতো। অথবা সড়কের খোয়া উঠে থাকায় বিশেষ প্রয়োজনে ব্রেক করলেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়তে হতো। সে সময়ে সড়কটির পরিস্থিতি খারাপ থাকায় বহু পরিবহন বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও এখন সড়কটির উন্নয়ন হওয়ায় আবারো যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে।

যানবাহনের চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুরপাল্লার যানবাহনগুলোর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তাদেরকে একটু অতিরিক্ত গতিতেই চলতে হয়। আর এমতাবস্থায় যদি সড়কে ছোট ছোট যানবাহনের চাপ বেশি থাকে তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এ ছাড়াও সড়কের পাশে হাট-বাজার, সড়ক ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোকান-পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নানাস্থাপনা থাকায় কিংবা পাশের সড়কগুলো থেকে অতর্কিত ব্যস্ততম এই সড়কে ঢুকে পাড়ার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক বলেন, অবৈধ স্থাপনা কুষ্টিয়া- রাজবাড়ী সড়কের দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এমন স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাতে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিতকরণ, দখলদারদের চিঠি দেওয়াসহ মাইকিং পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে সবকিছুই থমকে গেছে। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে প্রথমেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।