বকেয়া বেতনের দাবিতে পৌর ভবনে তালা ঝুলিয়ে কর্মচারীদের কর্মবিরতি

0
25

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

৪৩ মাসের বকেয়া বেতন প্রায় আট কোটি টাকা পরিশোধসহ কয়েক দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ,
পৌর ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন কুমারখালী পৌরসভার কর্মচারীরা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১০ টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত একমাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এ দিকে ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা সেবা না পেয়ে পৌররসভায় এসে ফিরে যাচ্ছেন।

এসময় কুমারখালী পৌর কর্মচারী সংসদের সভাপতি ও পৌরসভার প্রধান সহকারী রাজু আহমেদ বলেন, ৫২ জন কর্মচারীর ৪৩ মাসের প্রায় আট কোটি টাকা বেতন বকেয়া। দীর্ঘদিন ধরে তা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ সম্প্রতি বদলিকৃত প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামানের প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্র্যাচুইটি ভাতা পরিশোধের জন্য চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। পৌরসভার ইতিহাসে কোনোদিন কারো গ্র্যাচুইটি ভাতা দেওয়ার ঘটনা নেই। এছাড়াও বেতন-ভাতা পরিশোধে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বৈষম্য দূরীকরণ এবং সম্প্রতি বদলিকৃত এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধের
দাবিতে আমরা প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছি।

তার ভাষ্য, বদলিকৃত প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধ এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একমাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

বাংলাদেশ পৌর কর্মচারী সংসদের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান টুটুল বলেন, বছরের পর বছর কর্মচারীদের বেতন বকেয়া। তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অথচ কর্মকর্তারা বেতন ভাতা নিয়ে উৎসব করছেন। সুতরাং একই কার্যালয়ে দুই নিয়ম চলতে পারেনা। এই বৈষম্য দুর করে আমরা দ্রæত বেতন পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।

জানা গেছে, ইতোপূর্বে কুমারখালী পৌরসভায় কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর গ্র্যাচুইটি ভাতা পরিশোধ করা হয়নি। অথচ হঠাৎ বদলিকৃত এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা প্রদানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পৌরসভার হিসাবরক্ষক ও সহকারী প্রকৌশলীকে বের করে দিয়ে কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন কর্মচারী। সরেজমিন গিয়ে এই পৌরসভার প্রধান ফটক ও দুই কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ফোনে হিসাবরক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। কর্মচারীরা কক্ষে তালা লাগিয়েছে। সেজন্য বাড়িতে চলে এসেছি।

আরও পড়ুন – খোকসায় ইয়াবাসহ এক মাদক বিক্রেতা আটক

এ দিন পৌরসভায় সেবা নিতে এসেছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলংগী এলাকার বাসিন্দা ফারিহা ফাতেমা রোজা। তিনি বলেন, বাচ্চার পাসপোর্ট করব। সেজন্য রোববার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দিয়ে গিছিলাম। সোমবার নিতে এসে দেখি তালা ঝুলছে। কাজ বন্ধ রয়েছে। তার ভাষ্য, অনেকেই সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন – বিদ্যালয়ের গাছে ঝুলছিল নৈশপ্রহরীর মরদেহ

অনেক বছর আগে থেকেই কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, কর্মবিরতির বিষয়টি জানতে পেরেছি। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রæত সমস্যার সমাধান করা হবে।