কলেজের খেলার মাঠ ব্লক তৈরীর কারখানা

0
7

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মির্জানগরের মীর আব্দুল করীম কলেজের খেলার মাঠ দখল করে নিয়ে নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি, খেলাধুলার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও এলাকার যুবসমাজ।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই মাঠে একসময় প্রতিদিন বিকালে খেলায় মেতে উঠতেন কিশোর-যুবকরা। দূর গ্রাম থেকেও এখানে বিভিন্ন দল খেলা করার জন্য আসত। কিন্তু বিগত মাসছয়েক হলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার শিশু-কিশোরদের এই খেলার মাঠ দখল করে হাজার হাজার ব্লক তৈরি করছেন।

সরেজমিনে কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ইট-পাথর ও সিমেন্ট বালু দিয়ে বানানো ব্লকে উচুঁ উচুঁ ঢিপি তৈরি হয়েছে কলেজ মাঠে। মাঠের মাঝখানেই পড়ে আছে খোয়া ভাঙা মেশিন।

মাঠের এক কোনে একটি সাইনবোর্ড। দেখে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙন হতে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলাধীন তালবাড়ীয়া এবং কুমারখালী উপজেলাধীন শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি রক্ষা শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ব্লক গুলো তৈরি করা হচ্ছে।

কলেজ প্রাঙ্গণে কীভাবে এই বøক বানানো হচ্ছে? কলেজ কর্তৃপক্ষের বা এতে কী লাভ, এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আহসান উল হক খান চৌধুরী বলেন, কাজ শেষে হয়তবা উনারা কলেজকে কিছু দেবেন। কিন্তু আপাতত আমরা মানবিক বিষয় মাথায় রেখে ব্লক তৈরির অনুমতি দিয়েছি।

তিনি বলেন, পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে কলেজের আঙিনায় চলে এসেছে। এসব ব্লক দিয়ে তো কলেজই রক্ষা করা হবে। সেসব বিষয় মাথায় রেখে বাচ্চাদের খেলার মাঠ জেনেও আমরা বøক বানানোর বিষয়ে কোনো আপত্তি করিনি। ঠিকাদার স্থানীয় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এ বিষয়ে স্থানীয়দের কেউই কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সোহাগ মন্ডল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে আমরা সেখানে বøক বানাচ্ছি। নদী থেকে ২০০ মিটার দূর পর্যন্ত তারই জমি। সেই বিবেচনায় এটি কলেজের জমি হলেও নদীরও জমি।

আরও পড়ুন – রাশিয়ার দিলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বার্তা

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভাবে কলেজের মাঠে ব্লক তৈরির কাজ করতে পারে কিনা, জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোথায় ব্লক তৈরি করছে সেটা আমাদের জানার কথা না। আমরা শুধু তাদের কাছ থেকে বøক বুঝে নেবো। কলেজের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই কলেজে ব্লক বানানো হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই। আর যদি হয়ও সেটা আমাকে কেউ জানায়নি।

আরও পড়ুন – খোকসায় দলিল লেখক কে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, কলেজ মাঠে এভাবে ব্লক বানানোর এখতিয়ার কারো থাকার কথা না। তারপরও সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।