কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য হাদিউল ওরফে হাদিকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলার কামিরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের পিছন থেকে তাকে আটক করে মিরপুর থানা পুলিশ। আটককৃত হাদিউল আসামি উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কামিরহাট গ্রামের হযরত আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, আটক হাদিউল ওরফে হাদির বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র ও ছিনতাই, নাশকতাসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাত দুইটার সময় মিরপুর থানার ছাতিয়ান কালিতলা থেকে দুর্গাপুর মাঠের নির্জন এলাকায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
এসময় ডাকাত দল অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মৃতের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ৩২ হাজার ৬০০ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে গেছে। অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ আছে কিনা নিশ্চিত হতে মুখের কাপড় সরিয়েও রদখে ডাকাত দল।
এ ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার তদন্তে নামে। পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বৃহস্পতিবার দিনভর এবং সারারাত মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। অভিযানের একপর্যায়ে শুক্রবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে আত্মগোপনে থাকা চক্রের অন্যতম সদস্য ১১ মামলার আসামি হাদিউল ওরফে হাদিকে কামিরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের পিছন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাদিউল ওরফে হাদি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
চক্রটি রাতভর জুয়া খেলতো এবং খেলার শেষে চুরি, ছিনতাই-ডাকাতির মত অপরাধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতো। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্য হাদিউলকে বুধবারের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনায় আসামি দেখিয়ে শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের নিকট আসামির রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন – এনসিপি’র যুগ্ম সমন্বয়কারী পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পোড়াদহ ইউনিয়নের সৌদি রাজপুর গ্রামের নিয়ামত আলীর স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৬০) মৃত্যুবরণ করেন। এরপর সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে তার স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স যোগে রাজশাহী থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত ২টার দিকে দুর্গাপুর মাঠের মধ্যে পান বরজের কাছে ৪-৫ জনের একদল ডাকাত অস্ত্রের মুখে অ্যাম্বুলেন্সের গতিরোধ করে। ডাকাত দল নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ সর্বস্ব লুট করে। এমনকি ডাকাত দল লাশের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য লাশের মুখ খুলে দেখে যে সত্যিই সে মারা গেছে কিনা।