বিদ্যালয়ে পরীক্ষা ও ক্লাস চালু রেখেই বিএনপি কর্মীদের ভূড়ি ভোজ

0
29

বিরিয়ানির গন্ধে কি আর শিশুদের আটকে রাখা যায়

স্টাফ রিপোর্টার

বিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ক্লাস চালু রেখেই ক্যাম্পাসের ভিতরের প্যান্ডেল করে বিএনপির কর্মীদের ভূড়ি ভোজের আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগের নেত্রী ও অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেক খেলেন।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্ব) কুষ্টিয়ার খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমীর অনুসারি রিপন হোসেনের আয়োজনে দলটির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শো-ডাউন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। এ উপলক্ষে কর্মীদের আপ্যায়ণের জন্য আগের দিন বুধবার রাতে বিদ্যালয়ের ভিতরে দু’টি গরুজবাই করা হয়। প্রায় ৫০টি সসপ্যানে ৭ মন মাংশ ও ৮ম চাউলের বিরিয়ানি রান্না করা শুরু হয়। বৃহম্পতিবার দুপুর পর্যন্ত রান্না ও ভূড়িভোজ চলে। উপজেলা ও পৌর বিএনপির ব্যানারে আয়োজনটি করা হয়। কিন্তু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ আয়োজনের দায়-ভার নেননি। এ ছাড়া তিনি বলেন আয়োজক নিজেই বিএনপির সদস্য নয়। বিরিয়ানির মনোমুগ্ধ সুবাসে সারা দিনই শিশু শিক্ষার্থীরা বাবার ছুটে গেছে রান্নার কাছে।

বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের দোতলার অফিস ছিলো সুনসান নিরব। শিক্ষকদের বসার কক্ষ থেকে বেড়িয়ে এলেন আনিসুর রহমান নামের এক শিক্ষক। পুরাতন ভবনের একতলার ছাদে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময় তার গল্পে বিরিয়ানির গন্ধ ভেসে আসছিলো নাকে। তিনি গল্পের ছলে স্বীকার করে বলেই বসলেন “বিরিয়ানির গন্ধে ছাত্রদের কী আর আটকে রাখা যায়। ওরা বার বার ছুটে আসে বাবুচির কাছে।” অনেক চেষ্টা করে ওদের (ছাত্র-ছাত্রী) কয়েক দফায় ক্লাসে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের চারতলা ভবনের সব গুলো কক্ষে দশম শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীর প্রথম সাময়িকী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিলো। বিএনপি কর্মীদের ভুড়ি ভোজের সব রান্না করার স্থানের পাশের ছিলো শিশুদের শ্রেণি কক্ষ। সেখানে ক্লাস নেওয়া ও শিশুদের ধরে রাখা বড়ই কষ্ট কর ছিলো।

নাম প্রকাশে একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন , প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় ধরে স্কুলটির দুটি মাঠ রাজনৈতিক নেতারা করায়ত্ব করে রেখেছেন। যে কেউ, যে কোন ভাবে মাঠ ও স্কুলের আঙ্গিনা ব্যবহার করছে। এর ফলে শ্রেনি পাঠদান ও শিশুদের মনের উপর প্রভাব ফেলে। তারা এর প্রতিকারের দাবি ও করেন।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন খান জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠা বাষিকী উপলক্ষে যে রিপন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সে নিজে বিএনপির কেউ না। অনুষ্ঠান আয়োজনের কোন একতিয়ার তার নেই।

এ ব্যাপারে আয়োজক রিপন হোসেনে বলেন, তার অভিজ্ঞতা কম। স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হওয়ার জন্য তার দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আর কিছু করার নেই।

খোকসা জানিপুর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষাক শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলার জন্য তদার ফোনে কল করা হয় তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তাকে ম্যাসেজ পাঠানো হয় তাও সারা পাওয়া যায়নি।

খোকসা জানিপুর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দীপন প্রথমে ফোন ধরেনি। তবে পরে কলব্যাক করে জানান, আয়োজকরা তাকে ভুল বুৃঝিয়ে অনুমতি নিয়েছে। ভূড়ি ভোজের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে জানান নি।